পাসওয়ার্ড নিরাপদ রাখতে যা করণীয়?

পাসওয়ার্ড নিরাপদ রাখতে যা করণীয়| What to do to keep passwords safe?

পাসওয়ার্ড নিরাপদ রাখতে যা করণীয়?

বর্তমান ডিজিটাল যুগে আমাদের প্রত্যেকেরই হাতে হাতে মোবাইল ফোন কিংবা কম্পিউটার রয়েছে তবে আমরা কি জানি, কিভাবে এসব সঠিকভাবে নিরাপদ রাখতে হয়।

বর্তমানে আমাদের বিভিন্ন তথ্য বা ডাটা চুরি করে খুব সহজেই  হ্যাকাররা তা ব্যবহার করতে পারছে। এতে আমাদের বিভিন্ন  সমস্যার সম্মামুখীন হতে হচ্ছে। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একাউন্ট এর পাশাপাশি ইমেইল একাউন্ট এবং কম্পিউটারের জন্য আমরা একাধিক পাসওয়ার্ড ব্যবহার করি।যা ইন্টারনেট নিরাপত্তার জন্য খুবই দূর্বল দিক।

আরও পড়ুন:

অনলাইন আয়ের সেরা ৫টি উপায়

যেভাবে ফেইসবুক থেকে টাকা আয় করবেন

পাসওয়ার্ড সুরক্ষা একটি মৌলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা যা গোপন তথ্য রক্ষা করতে এবং অননুমোদিত অ্যাক্সেস প্রতিরোধ করতে ব্যবহৃত হয়। 

এটি একটি গোপন কোড তৈরি করতে অক্ষর, সংখ্যা এবং চিহ্ন সহ অক্ষরের সংমিশ্রণ ব্যবহার করে যা শুধুমাত্র অনুমোদিত ব্যবহারকারীরা একটি সিস্টেম বা অ্যাকাউন্টে অ্যাক্সেস পেতে ব্যবহার করতে পারে। 

অনলাইন অ্যাকাউন্ট, কম্পিউটার সিস্টেম এবং মোবাইল ডিভাইসের জন্য পাসওয়ার্ড সুরক্ষা অপরিহার্য। একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড অনন্য, জটিল এবং নিরাপত্তা বাড়াতে ঘন ঘন পরিবর্তন হওয়া উচিত। 

পাসওয়ার্ড শেয়ার করা, একাধিক অ্যাকাউন্টের জন্য একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা এবং একটি অনিরাপদ স্থানে পাসওয়ার্ড সংরক্ষণ করা এড়ানোও গুরুত্বপূর্ণ। 

হ্যাকিং, পরিচয় চুরি এবং ডেটা লঙ্ঘনের মতো সাইবার হুমকি থেকে সংবেদনশীল ডেটা রক্ষা করার জন্য কার্যকর পাসওয়ার্ড সুরক্ষা গুরুত্বপূর্ণ।

আমাদের মধ্যে অনেকেই আমরা সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্টে দুর্বল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে থাকি। তবে দুর্বল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করলে এসব একাউন্ট দ্রুত হ্যাক করার মাধ্যমে ব্যক্তিগত বা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করে সাইবার অপরাধীরা। 

আবার চুরি করার পরও সেগুলো ব্যবহারে অর্থ দাবি করে সাইবার অপরাধীরা। তাই আমাদেরকে আমাদের ইমেইল একাউন্ট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একাউন্ট গুলিতে অবশ্যই শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে। কিছু উপায় অবলম্বন করার মাধ্যমে আমরা এসব পাসওয়ার্ড শক্তিশালী এবং নিরাপদ রাখতে পারি। 

বড় পাসওয়ার্ড ব্যবহার:

আপনার একাউন্টটি নিরাপদ রাখতে কমপক্ষে আট ডিজিটের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। পাসওয়ার্ড যত বড় হবে তত শক্তিশালী এবং নিরাপদ থাকবে একাউন্ট। 

তবে নিজের আপনজন কিংবা পছন্দের পশুপাখি বা বস্তুর নামের সমন্বয়ে পাসওয়ার্ড দেওয়া ঠিক হবে না। পাসওয়ার্ডটিতে ছোট-বড় অক্ষরের, সংখ্যা, চিহ্ন, ব্যবহার করতে হবে। 

শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহারের পাশাপাশি অ্যাকাউন্টের নিরাপদ রাখতে অবশ্যই দুই স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা অর্থাৎ (টু ফ্যাক্টর অথেন্টিফিকেশন) ব্যবহার করা প্রয়োজন। 

পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার:

এইসব জটিল পাসওয়ার্ড রাখার পর সেগুলো মনে রাখা জটিল এবং দুর্বোধ্য হয়ে পড়ে। অনেকেই পাসওয়ার্ড ভুলে যায়। এ ক্ষেত্রে পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করতে পারেন। 

বিভিন্ন ওয়েবসাইট অথবা অ্যাপে দ্রুত লগইন করতে ব্যবহারকারীদের পাসওয়ার্ডগুলো সংরক্ষণ করে রাখে পাসওয়ার্ড ম্যানেজার। 

পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহারের মাধ্যমে বারবার পাসওয়ার্ড লেখার ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

পাসওয়ার্ড খাতায় লিখে রাখুন:

অনেকেই একাউন্টের পাসওয়ার্ডগুলো কম্পিউটারের ওয়ার্ড ফাইলে বা মোবাইলের নোটপ্যাডে সংরক্ষণ করেন।যা একেবারেই ঠিক নয়। 

কারণ, সাইবার হামলা চালিয়ে কোনো কারণে কম্পিউটারের বা মোবাইলের তথ্য চুরি হয়ে গেলে পাসওয়ার্ডগুলো সাইবার অপরাধীদের কাছে চলে যাবে।

সেই পাসওয়ার্ডগুলো কাজে লাগিয়ে তারা কারও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট অথবা ই-মেইল অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে। 

তাই একাউন্ট নিরাপদ রাখতে খাতায় পাসওয়ার্ড লিখে ঘরে নিরাপদ জায়গায় সংরক্ষণ করুন।

একই পাসওয়ার্ড সব অ্যাকাউন্টে ব্যবহার না করা: 

সহজে মনে রাখার জন্য অনেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টসহ এক বা একাধিক ই-মেইল অ্যাকাউন্টে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে থাকেন, যা কোনভাবেই ঠিক নয়। 

কেননা, একটি অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে গেলে অন্য অ্যাকাউন্টও নিরাপত্তাও ঝুঁকিতে থাকবে।

একাউন্টের পাসওয়ার্ড হ্যাকড হয়েছে কি না,যাচাই করুন:

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাইবার হামলা চালিয়ে একাউন্ট থকে ব্যবহারকারীদের তথ্য চুরি করেও অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে না সাইবার অপরাধীরা। 

ফলে সেই ব্যবহারকারীও বুঝতে পারেন না তাঁদের একাউন্ট নিরাপদ আছে কি না। তাই গুগলের পাসওয়ার্ড চেকআপ এবং মজিলার ফায়ারফক্স মনিটর সুবিধা ব্যবহার করে নিয়মিত অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড নিরাপদ আছে কি না, তা যাচাই করুন। 

কিছুদিন পরপর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন:

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞের মতে অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা জোরদারে কিছুদিন পরপর পাসওয়ার্ডটি পরিবর্তনের পরামর্শ রয়েছে। 

কিন্তু মাইক্রোসফটের নিরাপত্তাবিশেষজ্ঞদের মতে, কিছুদিন পরপর নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের কারণে ব্যবহারকারীরা নিজেদের অজান্তেই অনেক সময় দুর্বল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। ফলে সাইবার হামলার ঝুঁকিতে থাকেন তাঁরা।

এখানে আপনাদের জানানো এই বিষয় গুলো যথাযথ ভাবে মেনে চললে আশা করছি আপনার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলো নিরাপদ থাকবে। 


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন